

মাগুরায় আলোচিত ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে তিন দিন পর মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি দিক দিয়ে কিছুটা অগ্রগতি হলেও বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে হৃদয়বিদারক বর্বরতার শিকার শিশুটির জীবন এখনো ‘সংকটাপন্ন’।গত শনিবার উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ডিএমসিএইচ থেকে বলা হয়, তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তাকে ধর্ষণের পাশাপাশি তার গলা চেপে ধরা হয়েছিল। ফলে তার শ্বাসকষ্ট হয়েছে। এ কারণেই তার সমস্যাগুলো আরও বেশি হচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ৮ বছরের শিশুটি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। তবে বিলম্বে হলেও ঘটনার তিন দিন পর মামলা ও গ্রেপ্তার করা হয় আসামিদের।এদিকে এ ঘটনায় সারা দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়ার। মূলধারার গণমাধ্যম তো রয়েছেই, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এই পৈশাচিক ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও নাগরিক সমাজের ব্যানারে রাজপথে হচ্ছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। বিশেষ করে শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন। তারা এসব অপকর্মের জন্য দেশব্যাপী সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থাকে দায়ী করছেন; যা নিয়ন্ত্রণে সরকারকেই কাঠগড়ায় দাড় করাচ্ছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, বর্তমান সরকারে চারজন নারী উপদেষ্টা থাকার পরও এ ধরনের ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল রোববারও দেশব্যাপী ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলেছে। সবার একটাই দাবি, নারীর নিরাপত্তা এবং নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের সর্বাত্মক; অর্থাৎ আইন ও বিচারিক দিক দিয়ে কঠোর অবস্থানের।আমরা জানি, নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা আমাদের সমাজের পরিচিত দৃশ্য। গত কয়েক দশকের এ চিত্রে দেখা যাবে, এ অবস্থার দিন দিন অবনতিই হয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে বেশকিছু পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে দেখা গেছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু পরিস্থিতির আশানুরূপ অগ্রগতি ঘটেনি। কেননা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ঘটেনি, যা অত্যন্ত হতাশার। ধর্ষণের ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানও করা হয়। তবে বাস্তবে এর প্রভাব কতটুকু—এটিই বড় প্রশ্ন।