

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক দূত কিথ কেলগের মধ্যকার বৈঠক-পরবর্তী পরিকল্পিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করতে হবে বলে জেলেনস্কিকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সব কিছু মিলিয়ে দেশ দুটির মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি ও কেলগের মধ্যকার এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে ইউক্রেনের চলা যুদ্ধের অবসান কিভাবে করা যায়, তা নিয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হওয়ায় এ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিথ কেলগের কথা বলার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এ সিদ্ধান্ত বদলে তাঁরা শুধু সাংবাদিকদের ছবি তোলার সুযোগ দেন। এ সময় প্রত্যাশা অনুযায়ী তাঁরা কোনো বিবৃতি বা প্রশ্নের উত্তর দেননি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সেরহি নিকিফোরভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন বাতিলের অনুরোধ করা হয়েছিল।
রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে ইউক্রেনের চলা যুদ্ধের অবসান কিভাবে করা যায়, তা নিয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হওয়ায় এ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিথ কেলগের কথা বলার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এ সিদ্ধান্ত বদলে তাঁরা শুধু সাংবাদিকদের ছবি তোলার সুযোগ দেন। এ সময় প্রত্যাশা অনুযায়ী তাঁরা কোনো বিবৃতি বা প্রশ্নের উত্তর দেননি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সেরহি নিকিফোরভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন বাতিলের অনুরোধ করা হয়েছিল।
সম্প্রতি ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতবিরোধ শুরু হওয়ার মধ্যে আকস্মিকভাবে কিয়েভ সফরে যান কেলগ। দুই নেতার মধ্যকার এ বিরোধ তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধে দেশটির প্রতি মার্কিন সমর্থনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো সন্দেহ তৈরি করছে।
জেলেনস্কি ও কেলগের সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণ পেয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিলেন।
বৈঠক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোকচিত্রী ও ভিডিও সাংবাদিকদের একটি কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। বৈঠকে জেলেনস্কি ও কেলগ করমর্দন করে একে অপরের মুখোমুখি বসেন।
সাংবাদিকদের এ সময় জানানো হয়, কোনো সংবাদ সম্মেলন হবে না।
জেলেনস্কির মুখপাত্র নিকিফোরভ হঠাৎ এ পরিবর্তনের কোনো কারণ জানাননি। তিনি শুধু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। কেন সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে, সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি হোয়াইট হাউস।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে আবার আলোচনায় বসতে হবে এবং ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করতে হবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদের অংশীদারি দাবি করলে গত বুধবার জেলেনস্কি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ওই চুক্তি করলে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন থাকবে।
মাইক ওয়াল্টজ গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের এক ব্রিফিংয়ে ওই মন্তব্য করেন। তাঁর ওই মন্তব্য কিয়েভে জেলেনস্কি ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনবিষয়ক প্রধান দূত কিথ কেলগের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের গুরুত্বকে ছাপিয়ে যায়।
ওয়াল্টজ বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়ে অপমান করার কারণে হোয়াইট হাউস ভোলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি ‘খুব হতাশ’।
ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। সেসবের মাঝে যেমন লিথিয়াম ও টাইটানিয়াম আছে, পাশাপাশি অনেক বড় পরিসরে কয়লা, গ্যাস, তেল ও ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে, যার বাজারমূল্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ওয়াল্টজ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রকে তার খনিজ সম্পদে প্রবেশ করার অধিকার দেয়, তাহলে তাদের মার্কিন সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। বা এরই মধ্যে যে মার্কিন সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এটিকে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। তিনি বলেছিলেন, “আমরা ইউক্রেনীয়দের সত্যিই একটি অবিশ্বাস্য এবং ঐতিহাসিক সুযোগ দিয়েছি। এটি ‘টেকসই’ এবং ইউক্রেনের জন্য ‘সেরা’ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।”
কিন্তু জেলেনস্কি এই প্রস্তাবকে নাকচ করে বলেন, ‘আমি আমাদের দেশ বিক্রি করতে পারি না।’
কিয়েভে কিথ কেলগের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে ইউক্রেনীয় নেতা ঘোষণা করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘একটি বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তি’ করতে প্রস্তুত, যা ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে সাহায্য করবে। এরপর মাইক ওয়াল্টজ হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন। জেলেনস্কি কিয়েভের বৈঠকটিকে ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন ঠিকই, কিন্তু এটিকে অনেকটা অপ্রতিভ রাজনৈতিক সাক্ষাতের মতো মনে হচ্ছিল।
ট্রাম্পের পক্ষের সিনিয়র নেতারা যখন সরাসরি মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন, তখন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কেলগ বলেন, তিনি কিয়েভে কেবল ‘শুনতে’ গিয়েছিলেন। কিন্তু এটি খুব দ্রুতই স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি প্রকাশ্যে কিছু বলবেন না। কারণ শেষ মুহূর্তে একটি সংবাদ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা